শিরোনামঃ
![]() ০১-০৫-২০২১ ০৬:৪০ অপরাহ্ন |
নার্ভাস নাইনটিজে তামিম বারবার ধরা খাচ্ছেন। অন্য ব্যাটসম্যানরা ঠিকমত দাঁড়াতেই পারছে না। মুশফিকুর রহীম আর মুমিনুল হক হাল ধরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু লঙ্কান স্পিনারদের ঘূর্ণির মুখে তাদের সেই প্রতিরোধও বালির বাধের মত উড়ে গেলো। মুশফিকুর রহীমের পর মুমিনুল হক এবং লিটন দাসের বিদায়ে ফলো অনের শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৯৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ব্যাটিং ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ফলো অন এড়াতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে অন্তত ২৯৪ রান। অথচ, ২২৪ রান না তুলতেই দলের ব্যাটসম্যানরা উইকেট দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। ২৪১ রানে ৭ম, ২৪৩ রানে পড়েছে ৮ম উইকেট। এখন লড়াই করছেন শুধু বোলাররা। ব্যাট হাতে তাদের লড়াই কতক্ষণ টেকে, সেটাই দেখার বিষয়।
তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৩। ৩ রান নিয়ে ব্যাট করছেন তাইজুল ইসলাম। ১৬ রান নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হয়ে যান। তাসকিন আহমেদ মাঠে নেমেই উইকেট হারিয়েছেন শূন্য রানে।
শ্রীলঙ্কার অভিষিক্ত প্রাভিন জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতেই বলতে গেলে দিশেহারা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের হারানো ৮ উইকেটের ৬টিই নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের একাদশ সাজানো হয়েছে ৬ ব্যাটসম্যান আর ৫ বোলার দিয়ে। এরমধ্যে ওপেনার সাইফ হাসান আগের ম্যাচের তুলনায় কিছুটা উন্নতি করলেও তিনি আউট হয়েছেন ২৫ রান করে। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত বিদায় নিয়েছেন ‘ডাক’ মেরে।
তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যান। ভালোই ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু ৯০ এর ঘরে গেলে যে তার কী হয়! আজও তিনি আউট হলেন ৯২ রানে। এরপর মুমিনুল-মুশফিকের লড়াই। বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় শক্তি। বলা যায়, বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের কোমর শক্ত এই দু’জনের কারণে।
তবে মুমিনুল আর মুশফিকের জুটিটা স্থায়ী হলো ৬৩ রানের জন্য। ৪০ রান করে বিদায় নেন মুশফিক। তার বিদায়ের পর তৃতীয় সেশনের শুরুতে লিটন দাসকে নিয়ে জুটি বাধার চেষ্টা করেন মুমিনুল। কিন্তু ৪৯ রানের মাথায় গিয়ে তিনিও আউট হয়ে গেলেন। হাফ সেঞ্চুরিটাও করতে পারলেন না।
লিটন দাসও হতাশ করলেন। মাত্র ৮ রান করে অভিষিক্ত প্রাভিন জয়াবিক্রমার বলে উইকেট দিয়ে বিদায় নেন তিনি। প্রতিষ্ঠিত সব ব্যাসম্যানই বিদায় নিলেন ২২৪ রানের মধ্যে। এরপর বোলারের কোটায় খেলতে নামা অলরাউন্ডার মিরাজ এবং তাইজুল জুটি বাধেন। ১৭ রান টিকলেন তারা। ১৬ রান করে সাজঘরের পথ দেখলেন মিরাজ, সেই জয়াবিক্রমার বলে।
আজ ম্যাচের তৃতীয় দিন মাত্র ১৫ মিনিট ব্যাটিং করেই ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে স্বাগতিকরা। তাসকিন আহমেদের বোলিংয়ে মুশফিকুর রহীমের দুর্দান্ত ক্যাচে আগেরদিনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ভাঙতেই ৪৯৩ রানে ব্যাটিং ছেড়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা খেলা হয়নি। ফলে আজ ১৫ মিনিট আগে শুরু হয় চতুর্থ দিনের খেলা। এই ১৫ মিনিটের মধ্যে ৩.৩ ওভার ব্যাটিং করে ২৪ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা, হারায় রমেশ মেন্ডিসের উইকেট। সবমিলিয়ে প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৪৯৩ রান।
জবাবে খেলতে নেমে টানা তৃতীয়বারের মতো ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন তামিম, বুঝিয়ে দেন চেপে বসতে দেবেন না বোলারদের। আগের ম্যাচের আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু থেকেই লঙ্কান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন তিনি।
তামিমের সাবলীল ব্যাটিংয়ে সাহস পান প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া সাইফ হাসানও। দুজনের ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভারেই চলে আসে জুটির ৫০ রান। যেখানে তামিমের অবদানই ছিল ৪১ রান। রান কম করলেও, প্রথম ম্যাচের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করছিলেন সাইফ।
রমেশ মেন্ডিসের করা ইনিংসের ১৫তম ওভারের প্রথম দুই বলে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪৯ রানে পৌঁছে যান তামিম। সেই ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফসেঞ্চুরি। যেখানে ছিল ৮টি চারের। এটি তামিমের টানা চতুর্থ ইনিংসে হাফসেঞ্চুরির কীর্তি।
তবে তামিমের জন্য এটিই প্রথম টানা চার ইনিংসে ফিফটি নয়। ২০১০ সালে টানা পাঁচ ইনিংসে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করার নজির রয়েছে তামিমের। সেবার শেষের দুইটি ইনিংস ছিল সেঞ্চুরি। কিন্তু এবার চার ইনিংসের একটিকেও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারলেন না তামিম।
যে ওভারে পঞ্চাশ পূরণ করেন তামিম, সেই ওভারের শেষ বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে লং অন দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকান সাইফ। পরের ওভারের প্রথম বলেই আবার বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। অভিষিক্ত প্রবীণ জয়াবিক্রমার পরের ওভারে হাঁকান জোড়া চার।
উইকেটে টার্ন ও বাউন্সের দেখা মিললেও তাতে তামিমের ব্যাটিংয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছিল না। সাইফও খেলছিলেন আগের চেয়ে বেশি সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বিশেষ করে রমেশ মেন্ডিসের করা ২৩তম ওভারে অফসাইডে অসাধারণ দুইটি ড্রাইভ খেলেন সাইফ।
মনে হচ্ছিল উদ্বোধনী জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু বিধিবাম! বিরতির আগে দুই ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অভিষিক্ত জয়াবিক্রমের বলে সেকেন্ড স্লিপে ধরা পড়েন ২৫ রান করা সাইফ।
রমেশের করা পরের ওভারের শেষ বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল শান্ত। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রানের পর টানা দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হলেন শান্ত। টেস্ট ক্রিকেটে যা বিরল নজিরই বটে।
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com