শিরোনামঃ
![]() ১৯-০৩-২০২১ ০৬:২১ অপরাহ্ন |
শুক্রবার দিন শেষে রাত। এই রাতের মধ্যভাগ পার (বাংলাদেশ সময়) হয়ে সাড়ে তিনটায় ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তামিম ইকবালের বাংলাদেশ।
এবারের ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে খেলতে হচ্ছে কম শক্তি নিয়ে। ইনজুরির কারণে দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং মিডল অর্ডারের আরেক নির্ভরতার নাম রস টেলর।
এ দুই প্রধান ব্যাটিং স্তম্ভ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের শক্তি গেছে কমে। বিশেষ করে ব্যাটিংটা হয়েছে অনেক কমজোরি। এমন একজোড়া কার্যকর পারফরমার ছাড়া নিউজিল্যান্ড তাদের মাঠে নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে অবশ্যই দুর্বল প্রতিপক্ষ। তাই আশার জাল বুনছেন বাংলাদেশের ভক্ত ও সমর্থকরা।
কিন্তু অনেকের হয়ত মনেই নেই এ সিরিজে বাংলাদেশও কিন্তু খেলছে তার সবচেয়ে বড় শক্তি-সম্পদ সাকিব আল হাসানকে ছাড়া। সাকিব যে কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সফলতম পারফরমার, তা কী জানা আছে?
বলার অপেক্ষা রাখে না, মাঝে এক বছর ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন ‘বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান।’ গত ২৯ অক্টোবর আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে আর টেস্ট সিরিজে মাঠে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান।
তবে সে অর্থে জ্বলে উঠতে পারেননি। বোঝাই গেছে, এক বছর বাইরে থাকায় নিজেকে ফিরে পেতে সময় লাগবে। ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন পয়মন্তঃ ভেন্যুতে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঠিক স্বরূপে ফিরে আসবেন তিনি।
কিন্তু সাকিব নিজে থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন এ সফর থেকে। তৃতীয় সন্তান ভুমিষ্টের সময় (এরই মাঝে ছেলে সন্তান ভুমিষ্ট হয়ে গেছে) স্ত্রী শিশিরের পাশে থাকার জন্য এ সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব।
তিনি শুধু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারই নন, বাংলাদেশেরও এক নম্বর পারফরমার। হোক তা টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি - সাকিবই বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ। দলের চালিকাশক্তি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার পারফরমেন্স বরাবরই খুব ভাল।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে বাংলাদেশ দেশে আর বিদেশে (নিউজিল্যান্ডের বাইরে) নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১০টি ম্যাচে জিতেছে। অধিকাংশ ম্যাচেই জয়ের নায়ক সাকিব। দু’বার ২০১০ সালে ঘরের মাঠে। আর একবার ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।
এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ২০১০ সালের হোম সিরিজ। ২০১০ সালের অক্টোবর ৫ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ’ করে ছাড়ে। সিরিজে জয়ী হয় ৪-০’তে। বৃষ্টির কারণে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
ওই সিরিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক সাকিব ওই সিরিজে ব্যাট ও বলে সমানভাবে জ্বলে উঠে হন সিরিজ সেরা।
দুটিতে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সেরা সাকিব ৪ ম্যাচে ১১ উইকেট ও ২১৩ রান (একটি করে ফিফটি ও সেঞ্চুরি) করে সিরিজ জয়ের রূপকার হিসেবে বিবেচিত হন সিরিজ সেরা পারফরমার। এখানেই শেষ নয়, ওই সিরিজে সাকিব যে দুই খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন, তার দুটিতেই অলরাউন্ড পারফরমেন্সের জন্য।
প্রথমে ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর ৫৮ রান ও ৪ উইকেট (৪১ রানে)। এরপর ১৪ অক্টোবর ২০১০ শেরে বাংলায় সাকিব শতরান ও (১০৬ ও ৩/৫৪) ৩ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।
সবচেয়ে বড় কথা হলো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট ও বলে বাংলাদেশের সেরা পারফরমারই সাকিব। ইতিহাস ও পরিসংখ্যান জানাচ্ছে কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সাকিব আল হাসানের । ২২ ম্যাচে ২২ বার ব্যাট করে সাকিবের সংগ্রহ ৬৩৯ রান। সর্বোচ্চ ১১৪। গড় ৩১.৯৫। স্ট্রাইক রেট ৮১.৬০। সেঞ্চুরি দুটি, হাফ সেঞ্চুরি তিনটি।
একইভাবে বোলার সাকিবও কিউইদের বিপক্ষে সবার সেরা। ২২ ম্যাচে সাকিবের ঝুলিতে জমা পড়েছে ৩৭ উইকেট। সেরা ৩৩ রানে ৪ উইকেট। ৪ উইকেট পেয়েছেন ৩ বার।
ওপরের পরিসংখ্যান পরিষ্কার জানান দিচ্ছে কিউইদের বিপক্ষে সবচেয়ে কার্যকর পারফরমার ছাড়া বাংলাদেশ খেলতে নামছে তাদেরই ঘরের মাঠে। পাল্লায় মাপলে সাকিবের অনুপস্থিতি ও অভাব যে রস টেলর আর কেন উইলিয়ামসের চেয়েও অনেক বেশি বাংলাদেশের জন্য। ঠিক তাই না?
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com