শিরোনামঃ
![]() ২১-১১-২০২০ ০৪:৫৫ অপরাহ্ন |
কুড়িগ্রাম জেলায় এবারের দীর্ঘায়িত বন্যায় চরাঞ্চলসহ নদ-নদীর তীরের আমন চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার পানি নেমে গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চল থেকে পানি শুকিয়ে গেছে। এর ফলে জেগে উঠা চরাঞ্চলে কৃষকরা বাদাম চাষ শুরু করেছেন।
মাটির তলে বপন করা এই বাদামই যেন চরাঞ্চলের কৃষকদের এখন গোপন রত্ন। তাই আমনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হওয়ার আশায় বাদাম খেতের দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন দেখছেন কুড়িগ্রামের কালির আলগা, গোয়াইলপুরী, রলাকাটা, ভগবতীপুর, পোড়ারচর, পার্বতীপুর, চর যাত্রাপুরসহ ঝুনকার চর এলাকার কৃষকরা। এসব অঞ্চলের ধুধু বালু চরে দিগন্তজোড়া সারিবদ্ধ বাদাম খেতে নয়ন জুড়িয়ে যায়। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের চোখে মুখে জ্বলছে আশার আলো।
সরেজমিনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরাঞ্চলের ঘনেশ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সারিবদ্ধ বাদাম খেতের এমন চিত্র দেখা যায়।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার ৩ হাজার ৬শ ৭০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় বাদাম চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫শ ৭০ হেক্টর জমিতে।
অনেক জমিতে এখনো আমন ধান থাকায় সেসব জমিতে বাদাম চাষ করা হয়নি। তাই আমন ধান ঘরে তোলা হলে সেসব জমিতেও বাদাম চাষ করা হলে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাবেন কৃষকরা।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঘনেশ্যামপুর এলাকার বাদাম চাষি রহমান মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। কৃষকদের মজুরি ও সারসহ আমার ব্যয় হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। ফলন খুবই সুন্দর হয়েছে। বাজার দর ভালো পেলে আমনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হতে পারবো।
সদর এলাকার নওয়ানী পাড়া গ্রামের বাদাম চাষি নেক্কার আলী জানান, আড়াই বিঘা জমিতে ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বাদাম চাষ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১৮-১৯ বাদাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি করে লাভবান হয়েছি। আশা রাখি এবারও লাভবান হবো।
একই এলাকার বাদাম চাষি বাচ্চু মিয়া জানান, চর থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বালু চর জেগে উঠেছে। প্রতি মণ বীজ ৫-৬ হাজার টাকা দরে কিনে ১২ বিঘা জমিতে লাগিয়েছি। এর মধ্যে ৪ বিঘা জমির বাদামের ফলন খুবই সুন্দর হয়েছে। অন্যান্যবার বাজার দর ভালো পেয়েছি। এবারও বাজার দর ভালো পেলে বাদাম বিক্রি করে বন্যায় ধানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদাম অক্টোবর মাসেই অনেকে বপন করেন। আবার অনেকে আমন ধান ঘরে তুলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে চাষাবাদ করেন। বাদাম চাষে প্রতি শতক জমিতে ১০-১৫ কেজি ইউরিয়া সারের ব্যবহার হয়। বাদাম পরিপক্ক হতে ৯০ দিন সময় লাগে।
বাদামের চাষ বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম লাগে। সঠিক পরিচর্যা পেলে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাদামের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com