শিরোনামঃ
![]() ২৩-০৬-২০২২ ০৬:২৪ অপরাহ্ন |
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বিদ্যালয় মাঠে রাস্তা সংস্কার কাজের জন্যে গাড়ির উপর স্থাপিত বিশেষ চুল্লিতে আগুন জ্বালিয়ে গলানো হচ্ছে বিটুমিন । এতে করে পুরো বিদ্যালয় চত্ত্বরে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় শ্রেণিকক্ষে টিকতে পারছেন না শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই গত চারদিন যাবৎ চলছে এই বিটুমিন গলানোর কাজ। দুপুরে যখন বাতাস বেশি থাকে তখন ধোঁয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যায়। এতে করে বিদ্যালয়ের পাঠদান কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বি্দ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসসূত্রে জানা গেছে, ঢেকুরিয়া থেকে হরিনাথপুর ছয় কিলোমিটার রাস্তার মেরামত কাজ পেয়েছে লিটন নামের এক ঠিকাদার। শুরু থেকেই ওই ঠিকাদার কাজের নানা অনিয়ম করে করছেন। এ কারণে গত সপ্তাহে ঢেকুরিয়া হাট এলাকার লোকজন রাস্তায় নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে উপজেলা প্রকৌশলী ওই খোয়া সরিয়ে নেবার নির্দেশ দেন। কিন্তু ভালো খোয়ার সাথে ওই খোয়াও কৌশলে ব্যবহার করেছেন ওই ঠিকাদার ।এমন অভিযোগ করেন সেখানকার ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম।একই ঠিকাদার বিদ্যালয় কমিটির অনুমতি না নিয়ে পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বিটুমিন পোড়ানোর কাজ শুরু করেছেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিন পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে দুটো চুল্লিতে পুরনো ঝুট কাপড় পুড়িয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে। সেইসাথে মেশিনের ঘরঘর শব্দ পুরো এলাকা জুড়ে। এসময় বাতাস জোরে প্রবাহিত হওয়ায় পুরো ধোঁয়া ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসে।পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, তিনদিন ধইরা ধোঁয়ায় কেলাসে থাইকতে পারি না। টিফিনেই চলে যাই।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবেল আলম জানান, ‘বারবার ঠিকাদারকে নিষেধ করেছি। কিন্তু শোনেনা। গত চারদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে দুইটা যন্ত্র বসিয়ে পাথর ও বিটুমিন গলিয়ে মিশ্রণ করা হচ্ছে। এতে ব্যাপক কালো ধোঁয়া ও ধুলোর সৃষ্টি হচ্ছে। ধোঁয়া ও ধুলোতে একাকার বিদ্যালয়টি প্রাঙ্গন। আজকে শিক্ষার্থীরা টিকতেই পারছে না। বিষয়টি শিক্ষা অফিসার স্যারকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ঠিকাদার লিটন মিয়া জানান, ‘এটা এলজিইডির কাজ। কারো অনুমতির দরকার নেই।এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যা পারেন লেখেন। কিচ্ছু হবে না।’
কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমতি নেয়া না নেয়া ঠিকাদারের ব্যাপার। তবে কাজ করলে ধোঁয়ার সৃষ্টি হবেই। একটু মেনে নিতে হবে।
কাজিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সমস্যায় ফেলে সড়কের কাজ করা যাবে না। ওখানে যে কাজ করা হচ্ছে এটা আমি জানি না। ইউএনও স্যার ও ইঞ্জিনিয়ার আছেন, তাঁদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, ‘কোন প্রতিষ্ঠানের জায়গায় কাজ করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। শিশুদের ঝুঁকিতে ফেলে কাজ করা যাবে না। প্রকৌশলী ও শিক্ষা অফিসারের সাথে বসে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেব।’
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com