শিরোনামঃ
![]() ৩০-০৭-২০২১ ১০:০৭ পূর্বাহ্ন |
কথায় আছে প্রেমে ও রণে মিথ্যা বলাটাও প্রয়োজনে মানানসই।“ মারি ওরি পারি যেভাবে।” জয় যখন ধরা দেয় তখন সত্যের চেয়েও সত্যি হয়ে ধরা দেয় সেই মিথ্যা। নিজের স্বার্থের জন্যে মিথ্যাচার এখন অনেকটা রীতিসিদ্ধ পররাষ্ট্র নীতির পর্যায়ে চলে গেছে। যারা বিপদে অন্যকে দান করে, তারাই আগে দান গ্রহণকারিদের হরণ করে। অনেকটা কবিতার সেই চরণের মতো ‘শৈবাল দিঘির বলে উঁচু করি শির/ লিখে রেখো একফোটা দিলাম শিশির।’ কৌশলগত কারণে বিশ্বের প্রতিটি দেশই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নিজের আখের কিভাবে পোক্ত হবে সেই চেষ্টায় লিপ্ত। জাতি ভাইদের মেরে বাস্তুচ্যূত করলেও তাই অনেক ইসলামী দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যায় না। বরং এখন অনেকে তাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। ঠিক এমনি একটি সমীকরণ দাঁড়িয়েছে এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানকে নিয়ে এখন চলছে রাজনীতির কঠিন হিসেব নিকেশ। সবাই নিজেদের স্বার্থের জন্যে ওৎ পেতে আছে।দেখা যাক কোন দেশ কি চিন্তা করছে।সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী চলে গেছে।আর এই সুযোগে নানা সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে অনেক দেশ।
সৌদি আরবঃ আফগানিস্তান বিষয়ে সৌদির আরবের আর ফিরে আসার পথ নেই। কারণ হুথিরা সম্পূর্ণ ইয়েমেন দখল করতে পারলে ইরান সৌদির ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলবে।সৌদি কখনও এটি চাইবে না।
ভারতঃ কৌশলগতভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আফগানিস্তানে ভারতের বিভিন্ন চলমান প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চীন তালেবানের সাথে সখ্যতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সফল হলে ভারতের চিন্তা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।
রাশিয়াঃ আমেরিকার সহায়তায় তালেবান রাশিয়া সমর্থিত নজিবুল্লাহ সরকারের পতন ঘটায়। আফগানিস্তানে রাশিয়ারও পতন ঘটে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অতীতের মত রাশিয়া আফগানিস্তানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না। তবে তালেবান রাশিয়ার সমর্থন লাভের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া এ অঞ্চলে ভারত ও চীন উভয়ের সাথেই বন্ধুত্ব রাখতে চায়। কারণ অনেক। দেশটি ভারতের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। আর বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়া ও চীন অনেকটা কাছাকাছি অবস্থানে আছে। নিজ দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তে রাশিয়া শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
চীনঃ চীন পাকিস্তানের বিশ্বস্ত বন্ধু। পাকিস্তানের মাধ্যমে চীন তালেবানের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করবে এবং প্রভাব বিস্তার করে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করবে। তবে বতর্মান তালেবান কোনো ফাঁদে পা দিবে বলে মনে হয় না। বতর্মান তালেবান ভারতের সাথেও সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করবে। চীনের উইঘুর মুসলিম নির্যাতন ইস্যু অন্তরালেই থেকে যাবে। এ বিষয়ে তালেবান ও পাকিস্তান কিছু বলবে না।
পাকিস্তান (সুন্নী প্রধান)ঃ শুরু থেকেই তালেবানদের পৃষ্ঠপোষক। বার বার অস্বীকার করার পরও আল-কায়েদা প্রধান লাদেনের অবস্থান পাকিস্তানেই ছিল।জইশ-ই-মোহাম্মদ, আল-কায়েদা, তালেবান, লস্কর-ই তৈয়বা প্রভৃতি উগ্রপন্থীদের সাহায্যে পাকিস্তান ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ খুঁজতে পারে।
করণীয়ঃ জাতিসংঘ শান্তি বাহিনী মোতায়েন। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিবাদমান সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে অস্ত্র সমর্পণ, সব পক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য সংবিধান প্রণয়ন এবং একটি নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়ার জন্য সব পক্ষের অঙ্গীকার নিশ্চিত করা। আফগান জনগণ যাদের বা যে দলকে রায় দিয়ে জয়যুক্ত করবে তাঁরাই দেশ চালাবে।
লেখক- কলামিস্ট ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com