উল্লাপাড়ায় দুগ্ধ সংকটে চিলিং সেন্টারগুলো
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মিল্ক ভিটা, প্রাণ,আকিজ এবং ব্র্যাক শীতলীকরণ কেন্দ্রে নিয়মিত দুধ বিক্রি করেন প্রায় ৪৫শ খামারি। গাভীর দুধের ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে গো খামারিদের শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলো লিটার প্রতি ৩৬ থেকে ৫৫ টাকা দরে মূল্য দিয়ে থাকে।
গতবছর লকডাউনে শীতীলকরণ কেন্দ্র গুলে খামারিদের চাহিদানুযায়ি দুধ নেয়নি, এতে অনেক খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) লাহিড়ী মোহনপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এবারের চিত্র ভিন্নরকমের, চলমান লকডাউনে খামারিরা শীতলীকরণ কেন্দ্রে চাহিদানুযায়ি দুধ দিচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছে শীতলীকরণ কেন্দ্রে দুগ্ধ উৎপাদন নিয়ে।
উল্লাপাড়ার চলনবিল অধ্যাুষিত লাহিড়ী মোহনপুর, কয়রা,বড়পাঙ্গাসী,উধুনিয়া,দূর্গানগর,পূর্ণীমাগাঁতী এছাড়াও ভাংগুড়া,ফরিদপুর, চাটমোহর থেকে উল্লাপাড়ার শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলোতে নিয়মিত দুধ দিয়ে থাকে অন্ততঃ ৪৫শ খামারি। শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলো সমিতির মাধ্যমে খামারিদের নিজ এলাকায় থেকে দুধ সংগ্রহ করেন।
এবছর লকডাউনে উল্লাপাড়ায় গো-খামারিদের দুধ বিক্রিতে কোন প্রভাব পরেনি। রমজানে গাভীর দুধের চাহিদা বেশি থাকায় খামারিরা মধ্যসত্বাভোগীদের দিকে বেশি ঝুঁকছে।এতে শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলোতে বেশি দুধ দিচ্ছে না। সাধারণ ভোক্তাদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করে বেশি অর্থ পাচ্ছে খামারিরা। অন্যদিকে শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলোতে খামারিরা চাহিদানুযায়ি দুধ না দেওয়াতে তাদের উৎপাদন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
লাহিড়ী মোহনপুরের দহকুলা গ্রামের গো-খামারি শরিফুল ইসলাম জানান তার খামারে প্রতিদিন ১শ থেকে দেড়শো লিটার দুধ পাওয়া যায়। রমজান মাসে সাধারণ ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে দুধ বিক্রি করায় শীতলীকরণ কেন্দ্র দুধ নিয়মিত দিচ্ছে না তিনি ।
খামারি শরিফুল আরো জানান শীতলীকরণ কেন্দ্র গুলোতে অনেক কম দামে দুধ বিক্রি করতে হয় এছাড়াও গোখাদ্যের মূল্য অনেক বেশি। এতে আমরা ক্ষতির মুখে পরেছি।
উল্লাপাড়ার লাহিড়ী মোহনপুর মিল্ক ভিটার ম্যানেজার ডাঃ আসাদুজ্জামান জানান, প্রতিদিন মিল্ক ভিটার স্বাভাবিক চাহিদা ৭ হাজার লিটার দুধ, কিন্তু বর্তমানে তাদের ওখানে মাত্র ২ হাজার লিটার দিচ্ছে খামারিরা। স্বাভাবিক চাহিদার চেয়ে কম দুধ পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন বিপর্যয়ে পড়ার উপক্রমে। তিনি আরো জানান রমজানে সাধারণ ভোক্তাদের চাহিদা বেশি থাকে এবং খামারিরা বেশি দামে দুধ বিক্রি করে। এছাড়াও মিষ্টি এবং ঘোল এর দোকানগুলোতে চাহিদা বেশি থাকায় মিল্ক ভিটায় দুধ চাহিদানুযায়ি পাচ্ছি না৷
আকিজ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান জানান তার কারখানায় প্রতিদিন ৩৬শ লিটার দুধ চাহিদা থাকলেও এখন পাচ্ছে মাত্র ১৬শ লিটার। এতে চরম বিপাকে পড়ছে কোম্পানি।