শিরোনামঃ
![]() ১১-০৩-২০২১ ০৩:৫৩ অপরাহ্ন |
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার চরঘাটিনা গ্রামের নাছিরের অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীকে যৌতুক চেয়ে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বিতারিত করে দেয়া হয়েছে। নির্যাতিতা নারীর স্বামীর বাড়ীতে ঠাই না পেয়ে বেলকুচি পৌর এলাকার চালা গ্রামে খালু তফাজ্জলের বাড়ীতে আশ্রয় নেয় তিনি।
পরে কোন ভাবেই সুরাহা না হওয়ায় নির্যাতিতা সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। মামলা সূত্রে জানাযায়, গত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ২১ তারিখে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা কাবিন রেজিস্ট্রি মূলে নির্যাতিতা গৃহবধূ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং নির্যাতিতার স্বামী নাছির উদ্দিন তার বিধবা শ্বাশুড়ীর নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। শ্বাশুড়ী বিবাহ মজলিসে মেয়ের কল্যণার্থে ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে ও নির্যাতিতা গৃহবধূর খালা খালু ছেলে পক্ষের নিকট হতে কিছুদিন সময় নেয় যৌতুকের টাকা পরিশোধের জন্য।
নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী একজন তাঁত শ্রমিক ও নির্যাতিতা গৃহবধু সুতার কাজ করিয়া জীবিকা নির্বাহ করে। উভয়ই বিবাহর পরে বেলকুচি উপজেলার চালা অফিসপাড়া গ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে ঘর সংসার করতে থাকে। নির্যাতিতার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজন বাকী ১ লক্ষ টাকা যৌতূক দাবী করে আসছিল। টাকা দিতে না পাড়ায় ঐ অন্তঃস্বত্বা গৃহবধুকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিল নির্যাতিতার স্বামী ও স্বামীর বাড়ীর লোকজন। এদিকে মামলা সূত্রে আরও জানাযায় নির্যাতিতার ননদের জামাই ডা: আব্দুল হাই নির্যাতিতার স্বামীর অগোচরে মাঝে মধ্যেই কু-প্রস্তাব দিতো।
কু-প্রস্তাবে রাজি না গয়ায় নির্যাতিতার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বলে। কু-প্রস্তাবের বিষয়টি নির্যাতিতা অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে তদাক্রশে নির্যাতিতা গৃহবধুর স্বামীকে ননদের জামাই ডা: আব্দুল হাই ভুল বুঝাইয়া সাংসারিক জিবনে অশান্তির সৃষ্টি করে। ঘটনার দিন সকাল ৯ঘটিকার সময় ডা: আব্দুল হাই ও স্বামীর পরিবারের লোকজন বেলকুচি পৌর এলাকার চালা অফিসপাড়া ভাড়া বাসায় আসিয়া নির্যাতিতার স্বামীর সাথে শলা কু-পরামর্শ করে ডা: আব্দুল হাইয়ের হুকুমে বাকি ১ লক্ষ টাকার জন্য স্বামীকে দিয়ে চাপ সৃস্টি করে এবং এক পর্যায়ে স্বামী নাছির উদ্দিন শাড়ীর আচল দিয়া গালায় পেচিয়ে নির্যাতন করে ও আসামীরা তাকে এলোপাথারি মারধর করে। নির্যাতিতার যৌতুকের ১লক্ষ টাকা পরিশোধ করলে স্ত্রীকে বলে আমি তোকে তালাক দিয়ে আরও ১টি বিয়ে করবো।
নির্যাতিতা বর্তমানে ৭ মাসের অন্তঃস্বত্বা, নির্যাতিতার স্বামী পেটের বাচ্চাও নষ্ট করার চেষ্টা করে। পরে নির্যাতিতা নির্যাতন সইতে না পেরে তার অভিবাকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা আদালতে ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। এ ব্যাপারে নির্যাতিতার খালু তফাজ্জল হোসেন জানান, আমার বায়রা মারা যাওয়ায় নির্যাতিতাকে লালন পালন করিয়া বিবাহ দেই। বিবাহের সময় ছেলেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দেই পরে আরও ১ লক্ষ টাকা দাবী করে। টাকা না পেয়ে মেয়েকে পাশবিক ভাবে নির্যাতন করে।
এক পর্যায়ে নির্যাতিতা আমার নিকট আশ্রয় নেয়। আইনকে আমি শ্রদ্ধা করি তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিচারিক আদালতে মামলা করেছি। আমি আইনের কাছে ন্যায্য বিচার চাই। নির্যাতিতা অন্তঃস্বত্বা গৃহবধু জানায়,আমার স্বামীসহ আসামীরা যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং পাশবিক ভাবে নির্যাতন করে। আমার প্রায় ১ বছর হলো বিয়ে হয়েছে। আমার ননদের জামাই ডা: আব্দুল হাই আমার স্বামীর অগোচরে বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দেয়। আমি তাকে অসম্মানিত জ্ঞাপন করলে স্বামীকে ভুল বুঝিয়ে আমাকে নির্যাতন করায়।
আমার স্বামী বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবী করে, যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে ৪ মাসের অন্তঃস্বত্বা অবস্থায় বেলকুচির চালা গ্রামে খালুর বাড়ীতে আশ্রয় নেই। আমি আইনের কাছে এ ব্যাপারে ন্যায্য বিচার দাবী প্রার্থনা করি।
ঠিকানা : অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
মোবাইল : ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
ইমেল : info@sirajganjkantho.com