কাজিপুরের সাথে সরিষাবাড়ীর স্থল যোগাযোগের দাবী সচেতন মানুষের
১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ০৯:০৭ অপরাহ্ন

  

কাজিপুরের সাথে সরিষাবাড়ীর স্থল যোগাযোগের দাবী সচেতন মানুষের

আব্দুল জলিল
০৫-০১-২০২১ ০৪:৪০ অপরাহ্ন
কাজিপুরের সাথে সরিষাবাড়ীর স্থল যোগাযোগের দাবী সচেতন মানুষের

আবদুল জলিলঃ  যমুনা নদী দ্বারা দুইভাগে বিভক্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সাথে পূর্বের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার সাথে স্থল যোগাযোগ স্থাপনের দাবী ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। এই দাবী বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধু সেতুর চাপ কমিয়ে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। আর এই সম্ভাবনার পালে এখন নতুন করে হাওয়া লেগেছে কাজিপুরের যমুনা নদীতে দেশের ৩২তম নদীবন্দর ঘোষণার মাধ্যমে। ইতোমধ্যেই বিআইডব্লিউটিএ, পাউবোর ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে  নদীবন্দরের  নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।

জামালপুরের ময়মনসিংহের সাথে যমুনানদীর দূর্গম নদী ও চর পাড়ি দিয়ে কাজিপুরের মানুষের যাতায়াতের তিক্ত অভিজ্ঞতা দীর্ঘ দিনের। যমুনা নদীর উত্তাল তরঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত থেকে মুক্তি পেতে এখানকার মানুষ বহু বছর ধরে সড়কপথে যোগাযোগের দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে। এরই মধ্যে যমুনা নদী কাজিপুর-সরিষাবাড়ি রুটে তার নাব্যতা হারিয়েছে অনেকখানি। জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ চর। বেশ কয়েক বছর যাবৎ ভূমি জাগরণের ওই প্রক্রিয়ায় ক্রমেই জেগে ওঠা চরের আয়তন ও উচ্চতা বাড়ছে তাল মিলিয়ে। এই পয়েন্টের ১৮ কিলোমিটার নদীর এখন পানি থাকে মাত্র তিন থেকে চার কিলোমিটার।

 

এই কারণে কাজিপুরের মনসুরনগর-চরগিরিশ হয়ে নাটুয়ারপাড়ার সাথে মেঘাই বন্দরের একটা সংযোগ স্থাপন এখন আগের যেকোন সময়ের চাইতে অনেক সহজ। মাত্র ৫০০ মিটার একটি সেতুর মাধ্যমে কাজিপুরের সালালের চর-নাটুয়ারপাড়া যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। এ পরিকল্পনায় সরিষাবাড়ি থেকে মনসুর নগর হয়ে চরগিরিশ ইউনিয়নের সালাল চর পর্যন্ত পাকাসড়ক বাস্তবায়নের কাজও অনেকদূর এগিয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে সালালের চরের পশ্চিমাংশে থেকে নাটুয়ারপাড়ার উত্তর পূর্ব কোণের ব্যবধান নদীপথে খুবই কম। মাত্র ২-৩ মিনিটে নৌকা পাড়ি দিয়ে সেখানে যাতায়াত সম্ভব। ইতোমধ্যে বিগত কয়েক বছরের চরে অনেক পাকা স্থাপনা ও রাস্তাঘাট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পৌণে এককোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রি কলেজ ভবন, মনসুরনগর, নাটুয়ারপাড়া, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশে ১০ শয্যার বেগম আমিনা মনসুর মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র, নাটুয়ারপাড়া ডাক বাংলো, অনেক স্কুল কলেজসহ নানা পাকা স্থাপনা তৈরি হয়েছে।  

একই সঙ্গে সড়কের দুইপাশে নদী শাসনের মাধ্যমে জেগে ওঠা বিশাল এ চরে নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন করাও অনেক সহজ হবে। ইতোমধ্যে এই এলাকার যারা শিল্পপতি আছেন তারা নিজ এলাকায় কারখানা স্থাপনে আগ্রহী হয়ে উঠছে। সার্বক্ষণিক তারা নদীবন্দরের কাজকর্মের খোঁজ খবর রাখছেন। বিশিষ্ট শিল্পপতি সাখাওয়াত হোসেন জানান, কাজিপুরের বিশাল চরে কারখানা স্থাপনে জমির অভাব হবে না। সেইসাথে শ্রমও পাওয়া যাবে সহজেই। এখন সরকার সেই ব্যবস্থা তৈরি করলে এখানে কারখানা স্থাপন করতে চাই।

কাজিপুর সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মনোয়ার জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা নানা প্রচার প্রচারণা, ব্যানার, লিফলেট ছাপিয়ে এই দাবী সবার নিকট তুলে ধরে আসছি। বর্তমান এমপি তানভীর শাকিল জয় বিষয়টিতে গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। এখন আমরা আশাবাদী দ্রুতই এই সড়ক নির্মাণের কাজ আলোর মুখ দেখবে। কাজিপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার জানান, মোহাম্মদ নাসিম সাহেবের প্রচেষ্টায়  নদীবন্দর স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। তাই সরিষাবাড়ীর  সাথে কাজিপুরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন এখন সময়ের দাবী। এটি হলে নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনের মাধ্যমে কাজিপুরের চেহারাই পাল্টে যাবে। তিনি আরও জানান, শুধু কৃষি নির্ভরই অনেক কারখানা এখানে স্থাপনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বন্দর নির্ভর অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে। যমুনাচরের দেড়লক্ষ মানুষের চিকিৎসাসেবা  নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এরইমধ্যে জামালপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে কাজিপুরের চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে যা যোগাযোগের এই যাত্রায় একটি মাইলফলক বলে তিনি উল্লেখ করেন।  


আব্দুল জলিল ০৫-০১-২০২১ ০৪:৪০ অপরাহ্ন প্রকাশিত হয়েছে
এবং 1161 বার দেখা হয়েছে।

পাঠকের ফেসবুক মন্তব্যঃ
Loading...
  • সর্বাধিক পঠিত
  • সর্বশেষ প্রকাশিত

  

  ঠিকানা :   অনামিকা কনকর্ড টাওয়ার, বেগম রোকেয়া স্মরনী, তৃতীয় তলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা- ১২১৬
  মোবাইল :   ০১৭৭৯-১১৭৭৪৪
  ইমেল :   info@sirajganjkantho.com